১৪৬
রাষ্ট্র সংস্কার বা বন্দোবস্তেরপ্লানিং চলছে “ওয়াকার – ইউনুস” কমিশনে।
গণঅভ্যুত্থান বা বিপ্লব যায় বলেন
মাত্র এই বঙ্গে দ্বিতীয় বঙ্গ পাইলাম!
রক্তের দাগ শুকায় নাই!
বিভীষণ পিও আমার দিল্লি পালায়ে
কলকাঠি ক্লিক করে
বানভাসি দেশ আমার!
রাষ্ট্র সংস্কার বা বন্দোবস্তের
প্লানিং চলছে “ওয়াকার – ইউনুস” কমিশনে।
এর মাঝে “সাগর-রুনি” মহাকাব্যের
ফাইল ডেস্কে আসতে না আসতেই
#রাহনুমা কাব্য!
“গণমাধ্যমের মা-বাপ সকল,
অনেকটা বাধ্য হয়েই লেখা । বেতন ভাতা সাংবাদিকেরা পান। অনেক হাউজে বেতন দেরি হয়, অনেকের বেতন আটকে থাকে, অনেকের পাওনা দেওয়া হচ্ছে না, অনেকে তো পাওনা টাকার কথা বলতেও পারেনি বা পারে না।
এই মহানগরীতে বেতনছাড়া মানুষ বেঁচে থাকা কঠিন, অসাধ্য। সহকর্মীদের অনেকে বাধ্য হয়ে দোকানপাট করেছেন, ভিডিওব্যবসা চালু করেছেন, বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন নানা পরিচয় দেখিয়ে। সংবাদপত্র ‘শিল্প’ নয় এখনও। এটি কাতরাতে থাকা একটি মাধ্যম; যারা আছে, যারা কাজ করছে সবাই কাতরাচ্ছে।
বিগত বছরগুলোয়, বিশেষ করে ১০ বছরের ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শ্রেণিগত দিক থেকে ‘মিডিয়া’ অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে; এর অনেক কারণ। আমরা নিজেরা নিজেদের মনমত, নিজেদের দর্শন, আদর্শ আর চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন ঘটাতে গিয়ে; শাসকশ্রেণির কাছাকাছি থাকার লোভ-লালসা থেকে; গণমাধ্যমের চরিত্র ঠিক করতে না পেরে, গণমাধ্যম ব্যবসাকে গণমাধ্যমময় না রেখে ব্যক্তিগত জেদ-লোভ, আদর্শ, লুঙ্গি-ধুতি, রিপুর ফাঁদে পড়ে গণমাধ্যম হয়ে উঠেছে ‘গণউত্তমমাধ্যমে’।
কবি আবু হাসান শাহরিয়ার এইটা ২০১৩ সালে তিনি যখন দৈনিক আমাদের সময়কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সম্পাদক হিসেবে; তখন বলেছিলেন। এরপর তো নিচের দিকে, অন্ধকারের দিকে। এই অন্ধকারের কোনও দিক নেই, নির্দেশনা নেই। আছে কেবল একদল স্বপ্নবাজ সংবাদকর্মী পরিশ্রম। এখনও ছোট থেকে ছোটতর কিছু, বড় থেকে বড়তর, ‘ফ্যাসিজমের পদধ্বনি’ বা এস আলম বা ডাকাত বেনজীর, সবই কিন্তু গণমাধ্যমের মাধ্যমে আসা। প্রচণ্ড হুমকি, বিরোধিতার মধ্যেও কিন্তু ‘মাত্র কয়েকজনের রাজনৈতিক তৎপরতার’ কথাও তুলে ধরেছে গণমাধ্যম।
ফলে, গণমাধ্যম এখনও আশার সঞ্চার করে রেখেছে। একটি সহনশীল সমাজে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিশ্চয়ই আপনি খারিজ করে দেবেন না।
এবার আসি রাহনূমা প্রসঙ্গে। তার মৃত্যুতে আমাদের হারাতে হলো আরও একজন তরুণ সাংবাদিক। এই হাতিরঝিলে রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন সাংবাদিক হাবিবুর রহমান। ২০২২ এ আমরা হারিয়েছি সাংবাদিক শবনম শারমিনকে।
বিগত ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে মারা গেছেন আমাদের চারজন সহকর্মী। আহত হয়েছেন শতশত সহকর্মী। তারা কিন্তু দশমত নির্বিশেষে সাংবাদকর্মী ছিলেন, যাদের জীবন গেছে ডিউটিরত অবস্থায়। এই যে মৃত্যু, এইসব মৃত্যুর আলাদা আলাদা কারণ।
রাহানূমা সারাহ’র মৃত্যুর কারণ‘বেতনহীনতা’র প্রচারণা কি আদৌ প্রমাণিত? তার মৃত্যুর একদিন আগেও তিনি ‘বাসা ভাড়া নিয়ে’ স্ট্যাটাস লিখেছেন। এখনও পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ জানানো হয়নি।
সেক্ষেত্রে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘বেতনহীন সাংবাদিকদের আন্দোলনের জন্য আহ্বান’ কীভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর কেবলমাত্র ‘বেতনহীনতা’র বিষয়টিই একজন মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে কিনা, সেটা হয়তো বিশেষজ্ঞরা আরও ভালো বলবেন।
তবে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কর্মজীবনের শুরুতেই দুই বছরের মাথায় বেকার হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু মরতে হয়নি, ইচ্ছেও করেনি। নিজের উপার্জিত জীবনই তখন আমি যাপন করছিলাম, তখন আমার ভাই-বন্ধুরাই আমার পাশে ছিলেন, আমাকে সঙ্গ দিয়েছেন। নিজেও নানা দিকে কাজ করেছি, যেমন চারুকলার সামনে বই বিক্রি করেছি (আরও একজন বন্ধুসহ); নিশ্চিতভাবে রাহনূমার বন্ধু-বান্ধবরা ছিলেন তার পাশে।
হাঁ, আমরা জানি আমাদের সমস্যা, আমাদের পেশার ভয়াবহতাও দেখতে পাচ্ছি। দলীয় পুষ্টমাধ্যমের চরিত্র ও আচরণ আমাদের সেই অভিজ্ঞতা দিয়েছে। যেমন ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, প্রশাসন।
তবে এখনও আলো জ্বালিয়ে যাচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। এখন আমাদের কীভাবে সংকট থেকে উত্তরণ হবে, সেটা নিশ্চয়ই স্টেকহোল্ডাররা ভাবছেন। আর সম্ভাবনা কতখানি, তা ইতোমধ্যে কিছু গণমাধ্যমে ‘পরিবর্তনের’ মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। তবুও মনে মনে ‘অন্তর্বর্তী-প্রত্যাশা’ জমিয়ে রেখেছি, পরিবর্তন কিছু তো হবেই।”