১৪৪
যে দেশে চালচুলাহীন লোকও নিজের বিয়েতে ব্যান্ড পার্টি ভাড়া করে,
সে দেশে পদ্মা সেতু নিয়ে উচ্ছ্বাস একটু বেশিই হবে।
এটা স্বাভাবিক রীতি এই দেশের।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভোগা বাংলাদেশিদের এক দল পদ্মা সেতুকে জান্নাতের পুলসিরাত ভাবছে,
আরেকদলের মন খারাপ।
গণ হিস্টিরিয়াগ্রস্থ এই দুই দলের মধ্যখানেই বাস্তবতা পদ্মার বিপুল চরের মতো জেগে আছে।
সেই চরটা আওয়ামী লীগের আত্মবিশ্বাস।
কিন্তু বাংলার পাললিক মাটিতে কোনো বিশ্বাসই টেকসই না, আর পদ্মা তো সর্বনাশাই।
এই সেতুতে সারা বাংলাদেশের মানুষের হিস্যা কম না।
টাকা, শ্রম ও ধৈর্য তাদেরই।
বাইরের দুনিয়ার মানুষের কাছে এটা বাংলাদেশিদের জাতীয় সক্ষমতার উদাহরণ হিসেবে থাকবে।
আর যেখানে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ আনন্দিত, সেখানে সত্যিই কিছু ভাল ব্যাপার না থেকে পারে না।
পদ্মার সাথে আমার অনেক সুখ অনেক দুঃখের আখ্যান জড়িত।
অনেকবার আমি কাঁদতে কাঁদতে এ নদী পেরিয়েছি।
আমার আত্মজার কাছে এই নদী পেরিয়ে যেতাম।
কত দুর্ভোগ আবার কত নদীর অপার লীলার কত ঘটনা।
লঞ্চে, ফেরিতে, স্পিডবোট তো একবার ডুবতেই বসেছিল।
সেই নদী এখন নিমেষেই পেরুতে পারবো, এটা স্বস্তির।
তবুও সেতুর চাইতে পদ্মা নদীই আমার প্রিয়।
নদীটা শুকাতে বসেছে।
সেতুর কারণে হয়তো আরো বদল ঘটবে।
কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের বিপুল মানুষের জীবনে এটা অন্য গতি আনবে।
অর্থনৈতিক চক্রে আটকা পড়ে থাকা অনেকে বেরুবার সুযোগ পাবে।
এটাই মূল সুফল। এর জন্য অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধন্যবাদ পাবেন।
অভিনন্দন পাবে সমগ্র বাংলাদেশ। এ
টা আমাদের রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার একটা বড় নমুনা।
রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা একটা ব্যাপার,
যেটা নাগরিকদের রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাসও দেয়।
অপারপর দেশের হীনচোখে দেখার দৃষ্টির জবাব দেয়।
দক্ষিণবঙ্গ রাজধানীর আরো নিকটে চলে এলো, আরো নিকট–দূরত্বে চলে এলো কলকাতাও।
ভারত থেকে পূর্বভারতে যে কানেক্টিভিটি তা কোনোভাবেই পদ্মাসেতু ছাড়া পূর্ণাঙ্গ হতো না।
চীনা প্রজেক্ট হলেও সুফল পাবে ভারতও।
কিন্তু উন্নয়নের ধূলায় মানুষ অন্ধ থাকে না বেশিদিন।
ব্রিটিশের উন্নয়ন তাদের চিরস্থায়ী করেনি,
আইয়ুব খানের বিদায় ঘটেছিল উন্নয়নের দশকের তুঙ্গে।
আশির দশেকর বিচারে এরশাদও কম উন্নয়ন করেননি।
কিন্তু লোকে মনে রেখেছে শেখ মুজিব ও জিয়াকে।
কারণ, একজন স্বাধীনতার অবিসংবাদী নেতা.
আরেকজন টালমাটাল রাষ্ট্রকে টিকে থাকার আত্মবিশ্বাস জাগিয়েছিলেন।
যাঁর যা প্রাপ্য তাঁকে তা দিতেই হবে।
তেমনি শেখ হাসিনাকেও দিতে হবে পদ্মা সেতু নির্মাণে নেতৃত্ব দেওয়ার কৃতিত্ব।
কিন্তু বাঙালি বড়ই বিস্মৃতিপ্রবণ ও কারো কারো ভাষায় অকৃতজ্ঞ জাতি।
নদীর মুশিকল আসানের পর তারা মাঝিকে আর মনে রাখে না।
so, i don’t like lone!
&
Lone of Topic
#Faruk_Wasif!