২
জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে..
দলটা যদি দেশ জুড়ে সামনের কোন নির্বাচনে আশাতীত ভালো করে,
সেটা করবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পর্যায়ে থাকা
এবং বর্তমানে বিপদগ্রস্ত একদল লোকের সক্রিয় সমর্থনের কল্যাণে।
যদি আশাপ্রদ ফলাফল না পায়,
সেটা হবে আওয়ামী লিগের সমর্থকদের জামায়াতে ইসলামীকে
ভোট না দিতে না পারবার আদর্শিক কারণে।
নানান বিবেচনায় আওয়ামী লীগ আর বিএনপির অর্থনৈতিক কর্মসূচি,
প্রাত্যহিক সাংস্কৃতিক জগত উনিশ আর বিশ।
একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো আওয়ামী লীগ যতটুকু ফ্যাসিবাদী হবার ক্ষমতা রাখে
বাঙালী জাতীয়তাবাদকে উগ্রতার পর্যায়ে নিয়ে যাবার শক্তির কারণে,
সেটার অভাবে বিএনপি বড়জোর স্বৈরাচারী হবার সামর্থ্য রাখে,
বাঙালি মুসলিম একটা ভাবর্মূর্তি বজায় রাখা তার শক্তির জায়গা।
কিন্তু বাঙালি মুসলিম ভাবনার জায়গাতেও লীগের খুব একটা ঘাটতি শুধু নেই,
এমনকি উগ্র মুসলিম জোয়ারকেও সে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে ভুল করেনি,
এর সহজ উদাহরণ হেফাজত ও শামীম ওসমানের সম্পর্ক।
উনিশ আর বিশ অর্থনৈতিক চিন্তার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির
মাঝে আর একটা মিল হলো কর্মসূচিগত দিক দিয়ে
সুবিধাজনক– সমালোচকরা বলবেন সুবিধাবাদী– অবস্থান গ্রহণ।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ফ্যাসিবাদী হবার সামর্থ্য রাখে জামায়াতে ইসলামী,
ঠিক বিপরীত একটা মতাদর্শ দিয়ে।
এই কারণেই বহু আওয়ামী সমর্থকের পক্ষে জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দেয়া কঠিন।
উগ্রতার বিপরীতে, এবং সর্বদা সুবিধাজনক রাজনীতির বিপরতীতে একটা মধ্যপন্থী,
জাতিগঠনমূলক প্রগতিশীল পরিসর গঠন এখন জরুরি,
যারা নারীর অগ্রগতিকে নিশ্চিত করবে, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে,
চিন্তার স্বাধীনতা ও তৎপরতাকে নিশ্চিত করবে,
অর্থনীতিতে সুবিধাবাদী, বিদেশকেন্দ্রিক ও শিল্পায়ন বিরোধী নীতির বদলে
জাতীয় বিকাশের রাজনীতিকে নিশ্চিত করবে।
তেমন একটা রাজনৈতিক শক্তির পরিসর তৈরি করা,
তেমন একটা স্বপ্নকে আকৃতি দেয়াই এখনকার রাজনীতি নির্মাণের প্রধান কাজ।
Firoz AhmedBangladeshi writer