২৪৯
১. কওমি ধারার দ্বীনি শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের মর্যাদা দিয়ে সনদের ব্যবস্থা করেছেন
এবং এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য জাতি আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে!
ওই আইনে কওমি শিক্ষার সূচনা অর্থাৎ প্রাথমিক স্তরের ভিত্তি উল্লেখ নেই,
সাধারণ শিক্ষায় যেমনটি আছে।
কওমি শিক্ষা আইনে এই বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় কওমি শিক্ষা ব্যবস্থাটি
ভবিষ্যতে অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমতাবস্থায় “আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া”
বাংলাদেশের অধীন ‘কওমি মাদরাসা সমূহের দাওরায়ে হাদিসের (তাকর্মীল) সনদকে
মাস্টার্স ডিগ্রির (ইসলামিক স্টাডিস ও আরবি)
সমমান প্রদান আইন,
২০১৮’এর ২(১) ধারায়
‘কওমি মাদরাসা’
এর সংজ্ঞায় বর্ণিত “কওমি মাদরাসা”
অর্থ “আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আত”
ও দারুল উলূম দেওবন্দের আদর্শ,
মুলনীতি ও মত-পথের অনুসরণে মুসলিম জনসাধারণের
আর্থিক সহায়তার উলামায়ে কেরামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ইলমে ওহির শিক্ষাকেন্দ্র;’
উক্ত ধারার সঙ্গে ‘যেখানে মক্তব, নাজেরা, হেফজ থেকে শুরু করিয়া দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত
এবং
তৎপর ইফতা, উলুমুল হাদিস, তাফসিরসহ উচ্চতর শিক্ষা দেওয়া হয়’ সংযুক্ত করা আবশ্যক।
২. কওমি ধারার শিক্ষা একটি বিশেষায়িত শিক্ষা ব্যবস্থা।
উহার শিক্ষক ও শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রতিটি শিক্ষকের বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।
জাতীয়ভাবে বা ব্যক্তি উদ্যোগে
“কওমি মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট”
প্রতিষ্ঠা করা খুবই প্রয়োজন।
৩. যেহেতু কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের আর্থিক সাহায্য সহযোগিতার
মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে,
সেকারণে মাদরাসার সকল প্রকার দান আয়কর মুক্ত থাকা দরকার।
এই বিষয়ে পরিপত্র জারি করলে দাতারা উৎসাহের সঙ্গে
কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান করতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করবেন।
৪. মাদ্রাসার নিজস্ব আয় থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন,
স্বল্প আয়ের শিক্ষকদের মাসিক বেতন নিয়মিত পরিশোধ করা,
মেধাবি, এতিম, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা।
৫. কোনও সরকার প্রধানের উদ্যোগে একই সঙ্গে ৪৬০টি
উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ একটি বিশ্ব রেকর্ড বটে।
উক্ত মসজিদ সমূহে ইমাম ও খতিব নিয়োগের ক্ষেত্রে
কওমি মাদরাসা থেকে পাস করা মেধাবি “আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের”
আকিদার অনুসারিদের ইমাম খতিব নিয়োগ প্রদানে অগ্রাধিকার দেওয়া
এবং নিয়োগ বোর্ডে স্থানীয় কওমি মাদ্রাসা থেকে বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের
অন্তর্ভুক্ত করা যেন ভিন্ন মতাদর্শীরা নিয়োগ পেতে না পারে।
তাহলে সরকারের প্রদত্ত স্বীকৃতি বাস্তবে আরও প্রতিষ্ঠিত হবে
এবং সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
৬. কওমি শিক্ষাঙ্গন এবং সংশ্লিষ্ট ছাত্র শিক্ষক,
কর্মচারীদের সকল প্রকার প্রচলিত রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখার বিষয়ে
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৭. সকল কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “বেফাক ও হাইয়াতুল উলইয়া”-র
আওতাভুক্ত করে তার নীতিমালার আলোকে পরিচালনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
যাতে ছাত্রদের পড়ালেখার মান নিশ্চিত করা যায়।
৮. মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী মনে করেন,
তার দাবি বাস্তবায়িত হলে এবং প্রতিটি কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখলে ব্যক্তি ও জাতি গঠনে
কওমি মাদরাসাগুলো অনেক বেশি অবদান রাখতে পারবে।
পাশাপাশি জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, মাদক নির্মূল
ও সামাজিক অবক্ষয় রোধে তৃণমূল পর্যায়ে মাদরাসাগুলোর
উলামায়ে কেরামের সম্পৃক্ততা অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
Note:
(হাইআ’র সদস্য বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গা‘র
চেয়ারম্যান ও বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা রুহুল আমীন।)
By-