৬
রাজনীতির ব্যাক আপ। রাজনীতিই!
———————————————-
এনসিপি ভাঙার যে আশঙ্কা বাজারে শোনা যাইতেছে তা ব্যাখ্যার দাবি রাখে। মানে এইটা অবশ্যম্ভাবী ছিল। হইতই।
এনসিপি থিকা ইসলামপন্থী অংশ বাইর হইয়া গেলে এই দল একান্তই সেক্যুলার দলে পরিণত হবে।
এবং সেইটা এনসিপির রাজনৈতিক স্বাস্থ্য এবং জামায়াতের ভোটের বাক্সের জন্যে অপরিহার্য ভবিষ্যৎ।
এই রকম না হইলে শিবিরের একটা কপি দল হিসাবে রাজনীতির মাঠে বিরাজ করবে তারা।
তখন নারীপ্রশ্ন, হিজাব প্রশ্ন, নারীকে ডিস্টার্ব প্রশ্ন, সম্পত্তির সমান ভাগ প্রশ্ন ইত্যাকার প্রায় সব প্রশ্নে খালেদ মুহিউদ্দিনের সামনে নীরব থাকতে বাধ্য হবে এনসিপি।
এবং সেক্যুলার ও জাতীয় সঙ্গীতপন্থীরা তাদের দলে আর ঢুকবে না। বরং বাইর হইয়া যাবে ধীরে ধীরে।
এবং এই সেক্যুলাররা বিএনপির দিকে ঝুঁকবে। তারেক সাহেব অলরেডি তাদের দিকে রবি ঠাকুরের হাত বাড়াইয়া দিছেনই, আপনারা দেখছেন!
২.
আমার গণনায়,
ভোটের টাইমে এনসিপি
হয় বিএনপি
নাহয় জামায়াতের লগে জোট গড়বে।
এনসিপি যদি শিবিরেরই ইসলামপন্থী প্রতিচ্ছবি হয়,
তাইলে তারা জামায়াতের ভোট কাটতে পারবে বড়জোর, সেক্যুলারদের ভোট কিছুই পাবে না।
সে কারণেই তারা তা হবে না।
কিন্তু জামায়াতের দরকার এমন একটা অঙ্গদল,
যারা সেক্যুলার ভোট নিশ্চিত করতে পারবে।
তা এই টাইমে কারা সেইটা পারবে মনে করেন?
৩.
তো এই না এড়ানোযোগ্য অবস্থায় জামায়াতের দরকার একটা সেক্যুলার এনসিপি!
কাজেই বর্তমান এনসিপি থিকা ইসলামিপন্থীদের বাইর করা বা তাদের নিজে থিকা বাইর হওয়াটা জামায়াতের ও এনসিপির রাজনৈতিক লক্ষ্য হওয়া উচিত।
আপনারা জানেন, যা হওয়া উচিৎ আদর্শবাদীরা তাই কইরা থাকে। “উচিৎ” কথাটা তো তাদেরই আবিষ্কার!
তাইলে ইসলামপন্থী ও পাকিস্তানপন্থী যারা বাইর হইয়া যাবে এনসিপি থিকা, তারা কি আরেকটা এনসিপি তৈরি করবে!
এবং সেইটা কি ইসলামপন্থী রাজনীতির জন্যে আদৌ কাজের কিছু হবে?
এইটাও একটা ব্যাখ্যাযোগ্য অবস্থা।
৪.
বাইর হইয়া তারা দল করবে বটে, কিন্তু এই দলটা জামায়াত বা বিএনপি থিকা কোনো সমর্থন পাবে বইলা মনে হয় না।
বরং বর্তমান এনসিপির বিরুদ্ধে তাদের বিষোদগারের রাজনীতিরে কৌশলে ঠেকা দিতে শুরু করবে জামায়াতপন্থীরাই। নিজেদের সেক্যুলার ও নারী ভোটের স্বার্থে।
সামনের দিনগুলিতে বাইনারি যে দিকটারে সামনে আনবে জামায়াত, তা হইল সেক্যুলার ও ইসলামপন্থার বাইনারি।
এই কাণ্ডে ইসলামপন্থীদের ভোট পাবে জামায়াত, আর সেক্যুলারদের ভোট পাবে এনসিপি। মানে সরকার গঠনের প্রশ্নের দিক থিকা, জামায়াতই পাবে উভয় পক্ষের ভোট।
বিএনপি তাইলে কী পাবে? যাদের ভোট তারা আগে পাইত! নতুন ভোট, ইয়াং জেনারেশনের ভোট, এনসিপির দিকে যাবে। অর্থাৎ মেবি জামায়াতের দিকে!
তাইলে,
নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তাই এনসিপির মূল কাজ হইয়া দাঁড়াবে বিএনপির সেক্যুলার ভোটগুলিরে নিজেদের দিকে টানা। এই ক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কথাবার্তা, জামায়াত শিবিরের বিষোদগার এইগুলি কাজ দিতে পারে।
এই হিসাব থিকা যদি বিবেচনা করেন তাইলে
“গোলাম আযমের বাংলায়”
কথাটা এনসিপির জন্যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটা কথা ছিল। এইটারে ভারতের চাল হিসাবে দেখার পাশাপাশি এনসিপির লাভের দিক থিকাও দেখা জরুরি।
৫.
ইসলামপন্থী সর্বমোট ভোটের দিকে তাকাইলে জামায়াত দলটির একলাই সেই ভোট করায়ত্ত করাটা সর্বোত্তম পন্থা। তাতে সংসদে আসন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে জামায়াতের। তা না হইলে, অন্য ইসলামি দলগুলির সঙ্গে জোট করলেও, এনসিপি তাদের জোটে যোগ দিলেও, সংসদীয় আসন বাড়বে প্রয়োজনের তুলনায় অল্প।
৬.
একটু ভাবলেই বুঝবেন, এনসিপি ভাঙা নব এনসিপিও নির্বাচনে জামায়াতের ইসলামি ভোটই কাটবে, সেক্যুলার ভোটের নাগাল তারা পাবে না। সেহেতু জামায়াত তাদেরকে চাইবে না।
ফলে ভোটের টাইমে জোট গঠিত হওয়ার ৮০% সম্ভাবনা জামায়াত-এনসিপির। যদি না জামায়াতের নতুন লিডাররা ভুল কইরা বসেন।
৭.
এবং এনসিপি থিকা ইসলামপন্থী ও পাকিস্তানপন্থী যারা বাইর হইয়া যাইবেন তারা যে কী করবেন, আমি বুদ্ধির অভাবে সেই ভবিষ্যদ্বাণী এখনই করতে পারলাম না।
তবে একটা জিনিস শিওর, বাইর হইলে সরকারের বিরুদ্ধে যমুনার সামনে বসার শক্তি তারা হারাইবেন।
আপনারা জানেন, শক্তি কমতে থাকলে কেবলই তা কমতে থাকে 

“সেকেন্ড ল অব থার্মোডাইনামিক্স” বলে,
একবার শক্তি হ্রাস পাইতে শুরু করলে, তা স্বতঃসিদ্ধভাবে কমতেই থাকে,
যতক্ষণ না পুরাপুরি সমতা আসে।
এটলাস্ট প্রশ্ন একটা থেকেই যায়,
আওয়ামী লীগের
৩০-৩৫% ভোট কোথায় যাবে!???