২০০
শেখ হাসিনার পতন হলেও স্বৈরাচারী শাসনের যেসব খুঁটি এখনো অক্ষুণ্ন!
“স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের পর
বাংলাদেশের জনগণ আরেকটি বিজয় প্রত্যক্ষ করলেন,
সেই সঙ্গে প্রত্যক্ষ করলেন আরেকটি পরাজয়।
বিজয় এ কারণে যে দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরশাসন,
দুর্নীতি, লুণ্ঠন, দমন-নির্যাতন,
শোষণ ও সামরিকীকরণের নেতৃত্বদানকারী সরকার
জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে পরাজিত হয়েছে,
প্রমাণিত হয়েছে জনগণের শক্তি অপ্রতিরোধ্য।
আবার পরাজয় এ কারণে যে দীর্ঘদিনের সংগ্রাম আন্দোলন
এবং অনেক আত্মত্যাগের পর স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও
ক্ষমতা জনগণের হাতে আসেনি।
ক্ষমতা তাদের হাতেই রয়ে গেছে,
যারা স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের ক্ষমতার খুঁটি ছিল।”…..
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ কথাগুলো লিখেছিলেন
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের
মাসখানেক পর ১৯৯১-এর জানুয়ারিতে।
স্বৈরাচার এরশাদ পতনের বিজয়ের আনন্দের মধ্যে উচ্চারিত
আনু মুহাম্মদের কথাগুলোর সত্যতা অনস্বীকার্য।
পরবর্তী তিন দশকে বারবারই প্রমাণিত হয়েছে যে স্বৈরাচারের
খুঁটিগুলোর পতন না হলে শুধু ব্যক্তি স্বৈরাচারের পতনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আসে না।
’৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের তিন দশকের বেশি সময় পর
সারা দেশের মানুষ যখন ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে
আরেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের আনন্দ উদ্যাপন করছেন,
তখন এই কথাগুলো স্মরণ করার উদ্দেশ্য হলো ইতিহাসের তিক্ত
পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর জন্য অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার দৃষ্টি আকর্ষণ।